হিমালয়ের কোলঘেঁষা সীমান্তবর্তী উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে এবার বেশ আগে ভাগেই শীতের আগমনী বার্তা জানান দিতে শুরু করেছে। ভোরে পড়তে শুরু করেছে হালকা কুয়াশা। সেই সঙ্গে মৃদু ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে এ জেলায় শীতের আগমন ঘটলেও এবার আগেই শুরু হয়েছে শীত।
বুধবার (৭ অক্টোবর) ভোরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢেকে রয়েছে রাস্ত-ঘাট। সড়কে-মহাসড়কে বাস-ট্রাকগুলো চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। ভোরে ও সকালে অনেকেই নিজ নিজ গন্তব্যে বের হয়েছেন হালকা গরম কাপড় গায়ে মুড়িয়ে। আর ঘাসের ওপর ভোরের সূর্য হালকা লালচে রঙয়ের ঝিলিক দিচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে এ বছর আগাম শীত অনুভব হচ্ছে। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা ঝড়তে শুরু করে। রাতভর হালকা বৃষ্টির মত টুপটাপ করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। বিশেষ করে মাঠে ঘাসের আগায় ও ধানের শীষে জমতে দেখা যাচ্ছে বিন্দু বিন্দু কুয়াশা।
জেলার গ্রাম-গঞ্জ গুলোতে দেখা গেছে, পুরনো কাঁথা নতুন করে সেলাই করে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। বাড়ির পাশে গাছের নিচে বসে রং বেরঙের সুতো দিয়ে তারা তৈরী করছেন কাঁথা।
পৌর এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টির কারণে এ বছর আগাম শীত অনুভব হচ্ছে। দিনের বেলা কিছুটা গরম থাকলেও সন্ধ্যা নামার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে।
সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের তেলীপাড়া গ্রামের বাসচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, গত বছর এমন সময়ে কোনো কুয়াশা লক্ষ্য করিনি। এ বছর দুদিন ধরে সকালে বাস নিয়ে বের হবার সময় হেডলাইড জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।
সবজি চাষি রমজান আলী বলেন, হালকা শীতের কারণে ফসলে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস আক্রমণ শুরু করে। এতে ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে উঁচু-নিচু জমিতে পানি জমেছে। সবজি চাষের বৃষ্টির পানি ও শীতের কারণে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস দেখা দিতে পারে। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা কৃষকদের কারিগরি সহায়তাসহ বিভিন্ন রকমের পরামর্শ দিচ্ছেন।